২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Search
Close this search box.

৩২ বিচারপতির সরকারি বাসায় ‘অবিচার

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আহাদ চৌধুরী তুহিন,অমৃতালোক :

আজ রোবরার ( ১৫ ডিসেম্বর) দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম।  ৩২ বিচারপতির সরকারি বাসায়অবিচার প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ আদালতের ৩২ বিচারপতির বাসায় সরকারি কর্মচারীকে (এমএলএসএস) দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করতে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে। এতে ১৯ বিচারপতির পরিবারের বিরুদ্ধে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের কথা উঠে এসেছে। এ ছাড়া ১৬ বিচারপতি ও সাতজনের পরিবারের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, তাদের মুখের ভাষা অশালীন। এ বিষয়ে তিন সদস্যের জাজেস কমিটি গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে ১০২ বিচারপতি কর্মরত। একজন বিচারপতি প্রতি মাসে ৩২ হাজার টাকা গৃহস্থালি ভাতা পান। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিচারপতির আদালতের চেম্বারের জন্য একজন পিয়ন এবং বাসার কাজের জন্য একজন করে দারোয়ান ও বাবুর্চি দেওয়া হয়। তবে বেশ কয়েকজন বিচারপতি প্রভাব খাটিয়ে তাদের বাসায় দুই থেকে ছয়জন এমএলএসএস নিয়েছেন। এর মধ্যে চার অবসরপ্রাপ্তসহ হাইকোর্ট বিভাগের ৩২ বিচারপতির বাসায় ৭০ জন (১০ নারীসহ) এমএলএসএসকে কাজে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠেছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনে দাপ্তরিক কাজের সহায়তার জন্য ৪৫৪ জন এমএলএসএস কর্মরত। তাদের বেশির ভাগই এসএসসি পাস। কেউ কেউ স্নাতকোত্তর কিংবা এমবিএ ডিগ্রিধারীও রয়েছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এমএলএসএস পদের নতুন নাম অফিস সহায়ক। তাদের কাজ মূলত অফিসে সীমাবদ্ধ। ১৯৬৯ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, অফিস সহায়করা অফিসের আসবাব ও রেকর্ড সুন্দরভাবে বিন্যাস, ফাইল ও কাগজপত্র স্থানান্তর, হালকা আসবাব সরানো, ফাইল অন্য অফিসে নেওয়া, কর্মকর্তাদের পানীয়জল পরিবেশন, মনিহারি ও অন্যান্য জিনিস সংরক্ষণ, ইউনিফর্ম পরা, কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা, ভদ্র ব্যবহার করা, ব্যাংকে চেক জমা ও টাকা তোলা, ১৫ মিনিট আগে অফিসে আসা এবং বিনা অনুমতিতে অফিস ত্যাগ করবে না। কিন্তু আদালতের যেসব কর্মচারীকে বাসায় পাঠানো হয়, তাদের গৃহকর্মী, বাবুর্চি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতে বাধ্য করা হয়। সরকারি বন্ধের দিনও তাদের ছুটি দেওয়া হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিচারপতিদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে গত ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ তিন সদস্যের জাজেস কমিটি গঠন করেন। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার। কমিটি তিন থেকে পাঁচ দিন সুপ্রিম কোর্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে একটি প্রতিবেদন প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রধান বিচারপতির বিবেচনায় রয়েছে।

সমকালের হাতে আসা নথিতে অভিযুক্ত ৩২ বিচারপতির নাম রয়েছে। তবে সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুযায়ী তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, ৩২ বিচারপতির বাসায় কর্মরত এমএলএসএসরা কোনো না কোনো দুর্ব্যবহার কিংবা অমানবিক আচরণের শিকার। তাদের সাপ্তাহিকসহ অন্যান্য ছুটির প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করানো হয়। দেখানো হয় ভয়ভীতি। কর্মচারীদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার, মাছ কাটা, কাপড় ধোয়ানো, গৃহস্থালির সব কাজ করানো হয়। তা ছাড়া হাত তোলা, অনাহারে রাখা, পকেটের টাকা দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী কিনতে বাধ্য করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী কর্মচারী জানান, কাকরাইলে এক বিচারপতির বাসভবনে ১১ বছর ধরে কাজ করেন। শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের পরও ছোট দুটি সন্তান ও সংসারের কথা চিন্তা করে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন।

ওই নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আপিল বিভাগের এক বিচারপতির বাসায় গত বছর এক নারী কর্মচারীকে ধাক্কা মেরে ধারালো বঁটির ওপর ফেলে দেওয়া হয়। এতে তাঁর পেটের ডান পাশে ক্ষত হলে আটটি সেলাই দিতে হয়। তার পরও তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় বাসায় কাজ করতে হয়েছে।

সম্প্রতি হাইকোর্ট বিভাগের এক বিচারপতির স্ত্রী বাসায় থাকা নারী এমএলএসএসের হাতে-পায়ে গরম পানি ঢেলে দেন। তাঁকে চিকিৎসকের কাছে না পাঠিয়ে বাসায় রেখে সপরিবারে মার্কেটে চলে যান। পরে ওই নারীর স্বামী এসে তাঁকে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনে জানানো হলেও কারও অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় না। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে এড়িয়ে থানা পুলিশে যেতে ভয় পান ভুক্তভোগীরা।

দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম গুমের নির্দেশদাতা হাসিনা, প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গত ১৫ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।

গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গুমের ঘটনায় জড়িতদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।

এ বিষয়ে পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়। তাতে বলা হয়, ‘গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এ ছাড়া হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গুমের ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করেন। এর পরপর মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তাঁকে জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত একাধিক হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের বিশেষ শাখার সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁরা বিদেশে চলে গেছেন বলেও প্রচার রয়েছে।

গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গতকাল বিকেল পাঁচটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনটি জমা দেয়। তাতে বলা হয়, গুমের ঘটনায় কমিশনে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিশনের প্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন, যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন বাহিনী নিজেদের মধ্যে ভিকটিম (তুলে নেওয়া ব্যক্তি) বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে। তিনি আরও জানান, গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাঁদের ওপর এতটাই ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তাঁরা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।

‘প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে’ উল্লেখ করে কমিশনের সদস্যরা অধ্যাপক ইউনূসকে আয়নাঘর (গোপন বন্দিশালা) পরিদর্শনের অনুরোধ জানান। তাঁরা বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভিকটিমরা (ভুক্তভোগীরা) অভয় পেতে পারেন।’

প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে, সেগুলো দেখতে যাবেন। তিনি কমিশনের সদস্যদের তাঁদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

কমিশনের প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তাঁরা তিন মাস পর মার্চে আরও একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেবেন। কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত স্থানে থাকবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা উন্মুক্ত স্থানে টানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় সরকারি অফিসের নোটিশ বোর্ডের পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে (পাবলিক প্লেস) এই তালিকা টানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে স্থানীয় জনগণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে অবগত হতে পারে; কারো বিরুদ্ধে ‘অমুক্তিযোদ্ধা’ বা ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’র অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে যেকোনো নাগরিক অভিযোগ জানাতে পারে। যাচাই শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাতিল করা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ।

বন্ধ হবে সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কেউ মুক্তিযোদ্ধা হলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে মামলা হবে। ফেরত দিতে হবে ভাতাসহ সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা। তবে কেউ স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করে গেজেট বাতিলের আবেদন করলে তাকে সহায়তা দেবে সরকার।

এ ক্ষেত্রে তাকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী। শনিবার তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগের সরকারের তালিকা অনুযায়ী গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অমুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। আমরা ওয়েবসাইটে অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ চেয়েছি। এ পর্যন্ত স্বল্পসংখ্যক আবেদন পেয়েছি। কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না। আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় এরই মধ্যে অমুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। যারা স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করবে, তাদের আমরা সম্মান দেব। দায়মুক্তি দেওয়া হবে।’

তিনি আরো বলেন, “এ ছাড়া আমরা চাই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করতে স্থানীয় জনগণ সরকারকে সহায়তা করুক। এ জন্য প্রতিটি জেলা-উপজেলায় সরকারি অফিসের নোটিশ বোর্ডের পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে এ তালিকা টানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে স্থানীয় জনগণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে অবগত হতে পারে। কারো বিরুদ্ধে ‘অমুক্তিযোদ্ধা’ বা ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’র অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে যেকোনো নাগরিক অভিযোগ জানাতে পারে। যাচাই শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাতিল করা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ। বন্ধ হবে সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কেউ মুক্তিযোদ্ধা হলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। ফেরত দিতে হবে ভাতাসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা।”

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক। এরপর গত ১৫ আগস্ট সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি ও আধাসরকারি চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের একটি তালিকা তৈরি হবে। সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজনের চাকরি হয়েছে, এখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা এবং মুক্তিযুদ্ধ না করে যারা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এর পরই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করতে নানা উদ্যোগ শুরু করে মন্ত্রণালয়। তৈরি হয়েছে ‘অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ অভিযোগ ফরম’। এ ফরম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে অভিযোগ করা যাবে। এরই মধ্যে কয়েক শ অভিযোগ জমা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। তবে কাঙ্ক্ষিতসংখ্যক অভিযোগ না পাওয়ায় বিকল্প চিন্তা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানিতে সাড়া নেই-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দরপত্র আহ্বান করেও খোলা বাজার থেকে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানির জন্য দরদাতা পাচ্ছে না রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। সর্বশেষ পৃথক তিনটি দরপত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দরপত্র জমা না হওয়ায় দরপত্র বাতিল করে দিয়েছে সংস্থাটি।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, আগামী ৮ জানুয়ারি এলএনজি সরবরাহের জন্য সর্বশেষ দরপত্র আহ্বান করে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। এ দফায় কোনো প্রতিষ্ঠানেই দরপত্র জমা দেয়নি। এর আগে ১ জানুয়ারির জন্য নির্ধারিত দরপত্রে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। তার আগে ২৫ ডিসেম্বরের জন্য ডাকা দরপত্রে দুইটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। কিন্তু পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) অনুযায়ী দরপত্রে অন্তত তিন জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ না করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না, বরং বাতিল হয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে এলএনজি আমদানি শুরু হয়।  দায়মুক্তির ‘বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-র এর এতোদিন এলএনজি আমদানি করা হতো। দরপত্র প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি ছিল না। সম্প্রতি সরকার বিশেষ বিধানটি বাতিল করায় খোলাবাজার থেকে দরপত্র ছাড়া নতুন করে এলএনজি আমদানি করা সম্ভব নয়। ঐ কর্মকর্তা বলেন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় পিপিআর এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সর্বশেষ দরপত্রে অপেক্ষাকৃত কম দরপ্রস্তাব পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ন্যূনতম দরদাতার শর্ত পূরণ করতে না পারায় দরপত্রটি সম্পন্ন করা যায়নি। এখন পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার।

দেশে গত প্রায় দেড় দশক ধরে গ্যাসের সরবরাহে ঘাটতি চলছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংকট তীব্র হওয়ায় এলএনজি আমদানি করে ঘাটতি কিছুটা কমানো হয়েছে। দেশে দৈনিক ৪৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। বছরখানেক ধরে এ সরবরাহ দৈনিক গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে। এমন পরিস্থিতিতে তিন দফায় দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারায় খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির শিডিউল কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেছে। শিগিগরই পুনঃদরপত্র ডেকে তা সম্পন্ন করতে না পারলে পরিস্থিতি সমস্যাজনক হয়ে উঠতে পারে। বাড়তে পারে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি।

স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য ‘বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’ এর আওতায় ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। ঐ আইনের আওতায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে সরবরাহকারীর তালিকা প্রস্তুতের জন্য আগ্রহপত্র (ইওআই) আহ্বান করা হয় ২০১৭ সালে। নির্ধারিত সময়ে দাখিল করা ১৭টি প্রতিষ্ঠান এসএসপিএ অনুস্বাক্ষর করলেও ১৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় পেট্রোবাংলা। যা পরবর্তীতে ২৩টিতে উন্নীত করা হয়। তাদের মধ্যে থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনে আসছে বাংলাদেশ।

দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর ভারতসহ সাতঅসহযোগীদেশের তালিকা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের। খবরে বলা হয়, ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই)। এটি এমন একটি তালিকা, যেখানে উল্লেখিত দেশগুলো প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সহযোগিতা করে না বলে মনে করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভি জানিয়েছে, এ তালিকায় ভারত ছাড়া রয়েছে ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ভেনিজুয়েলা।
আইসিই জানিয়েছে, এই দেশগুলো সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সময়মতো ভ্রমণ নথি ইস্যু এবং নির্ধারিত ফ্লাইটে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। আইসিই’র তালিকা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪ লাখ ৫০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার অভিবাসীই ভারতীয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ৯০ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক করা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এদের অধিকাংশই পাঞ্জাব, গুজরাট এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা।

বৈধতার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা: অনেক ভারতীয় অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অবস্থান বৈধ করার চেষ্টা করলেও এই প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ। বৈধতার আবেদনে দু-তিন বছর সময় লাগতে পারে। অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যায় ভারত সবার উপর নয়। দুই লাখ ৬১ হাজার অবৈধ অভিবাসী নিয়ে শীর্ষে রয়েছে হন্ডুরাস, এরপর গুয়াতেমালার রয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার অবৈধ অভিবাসী। এশিয়ার মধ্যে চীন ৩৭ হাজার ৯০৮ জন অভিবাসী নিয়ে শীর্ষে। ভারত রয়েছে ১৩তম স্থানে।

কার্যকর হবে কঠোর অভিবাসন নীতি: যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী এক মাসের মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসন নীতি কঠোর করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া পরিচালনার পরিকল্পনা করেছেন। ফলে চূড়ান্ত আদেশপ্রাপ্ত হাজার হাজার ভারতীয় অভিবাসীকেও ফেরত পাঠানো হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কেও চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আন্তর্জাতিক ব্যাংক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে পতিত-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দেশে সরকারি-বেসরকারি অর্থায়নে প্রথম বিনিয়োগ কোম্পানি ‘ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স’ বা আইএফআইসি লিমিটেড। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিনিয়োগ কোম্পানিটির লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশী বিনিয়োগকে বৈশ্বিক অঙ্গনে নিয়ে যাওয়া। লক্ষ্য বাস্তবায়নে শুরুর দিকে বেশ তৎপর ছিল কোম্পানিটি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত ও পতিত হয়ে পড়ে আইএফআইসি।

বিনিয়োগ কোম্পানি আইএফআইসির হাত ধরে ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘ব্যাংক অব মালদ্বীপ লিমিটেড’। এটি ছিল মালদ্বীপে প্রতিষ্ঠিত প্রথম জাতীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির মালিকানার ৪০ শতাংশ ইকুইটির জোগান দিয়েছিল আইএফআইসি। মালদ্বীপের ওই ব্যাংকটির পুরো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও ছিল আইএফআইসির হাতে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া আইএফআইসির কর্মকর্তারা এশিয়ার দ্বীপদেশটির মানুষকে ব্যাংকিং শিখিয়েছে। যদিও সময়ের পরিক্রমায় ব্যাংকটির মালিকানা থেকে আইএফআইসি ছিটকে পড়েছে। আর ‘ব্যাংক অব মালদ্বীপ লিমিটেড’ এখন দেশটির সেরা ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

বিনিয়োগ কোম্পানি আইএফআইসিকে ১৯৮৩ সালের ২৪ জুন পূর্ণাঙ্গ তফসিলি ব্যাংকে রূপান্তর করে সরকার। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন প্রথম প্রজন্মের শিল্পোদ্যোক্তা জহুরুল ইসলাম। বাণিজ্যিক ব্যাংকে রূপান্তরের পরও বৈশ্বিক রূপ পাওয়ার চেষ্টা ছিল আইএফআইসির। ১৯৮৫ সালে দেশের এ ব্যাংকটির হাত ধরে প্রতিষ্ঠা পায় ‘ওমান বাংলাদেশ এক্সচেঞ্জ কোম্পানি’। এরপর ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের করাচি ও লাহোরে শাখা খোলে ব্যাংকটি। আর ১৯৯৪ সালে নেপালে ‘নেপাল বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেড’ ও ১৯৯৯ সালে ‘নেপাল বাংলাদেশ ফাইন্যান্স অ্যান্ড লিজিং কোম্পানি লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা ছিল আইএফআইসি ব্যাংকের বৈশ্বিক যাত্রারই নির্দেশক।

নব্বইয়ের দশকের শেষদিক থেকেই পথ হারাতে শুরু করে আইএফআইসি ব্যাংক। ওই সময় থেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী অলিগার্কদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। যখন যে দল ক্ষমতায় যাচ্ছে, তখন সে দলের সুবিধাভোগীরা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ দখলে নিচ্ছেন। দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারদরের কারসাজিতেও আইএফআইসি ব্যাংক জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। গত দেড় দশকে ব্যাংকটিতে জমাকৃত গ্রাহকদের আমানতের একটি অংশ ঋণের নমে লুণ্ঠিত হয়েছে। এ সময়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান আইএফআইসি ব্যাংক পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

আইনি লড়াইয়ে অনাগ্রহী .লীগ-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবর বলা হয়, গণআন্দোলনে টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন মামলায় একের পর এক গ্রেপ্তার হচ্ছেন দলটির প্রভাবশালী নেতারা। যাদের মধ্যে রয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য থেকে শুরু করে সাবেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্য (এমপি) এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা। ভারতে আশ্রয় নেওয়া দলীয় প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গ্রেপ্তার নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে এরই মধ্যে মামলা হয়েছে আড়াইশর বেশি। এর মধ্যে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলটির শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গণহত্যার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তাদের অনেককে ট্রাইব্যুনালে হাজিরও করা হয়েছে। তবে মামলার আসামি হলেও এখনো গ্রেপ্তার না হওয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হচ্ছে তা আইনগতভাবে মোকাবিলার কথা ভাবছেন না তারা। এসব মামলাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক ও বিদ্বেষপ্রসূত’ উল্লেখ করে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার কথা জানিয়েছেন। ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নেতারা।

এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অসাংবিধানিক’ দাবি করে আওয়ামী লীগের এসব নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে সরানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন তারা। নিত্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা, দেশের অর্থনীতি ঘুরে না দাঁড়ানো, শ্রমিক বিক্ষোভ, জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ স্থগিত হওয়া এবং সংবিধান সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে ভাবছে না। দলের নেতারা সাধারণ মানুষকে দুর্দশা থেকে রক্ষায় কাজ করতে চান।

তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররা বলছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমাতে গণহত্যা ও নির্যাতনের বহু ঘটনা ঘটেছে। আর এসব ঘটনার পরিকল্পনা ও নির্দেশদাতা ছিল আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটি বা ঊর্ধ্বতন দায় প্রমাণে এর সপক্ষে ইতিমধ্যে যথেষ্ট তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এবং দলটির সাবেক মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণে এগুলো যথেষ্ট। ইতিমধ্যে আন্দোলনে নিহতদের স্বজন, আহত, প্রত্যক্ষদর্শীসহ কয়েকশ ব্যক্তির বক্তব্য নিয়েছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী হিসেবে হাজির করা হবে।

এছাড়া সাক্ষ্য হিসেবে ঘটনার সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, ভিডিও ফুটেজ এবং আসামিদের মধ্যে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। প্রসিকিউশন মনে করে, ন্যায়বিচার ও বিচারে স্বচ্ছতার লক্ষ্যে সংশোধিত আইনে আসামিপক্ষকে সব রকম আইনি সুবিধা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বিচারে স্বচ্ছতা, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। অবশ্য, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো, প্রসিকিউশন ও লোকবল বাড়ানো না হলে বিচারকাজ বিলম্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।

 

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর

বিভাগীয় সংবাদ