২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Search
Close this search box.

২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আহাদ চৌধুরী তুহিন,অমৃতালোক :

আজ রোববার (২২ ডিসেম্বর’২০২৪) দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশার প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের একটা আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের সময় নিয়ে একটা ধারণা দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হয়নি দলগুলো। কারণ, নির্বাচন কবে হতে পারে, তা নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি সরকার। বিএনপি এবং অন্যান্য দল বলছে, নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য না দেওয়ায় সরকারের সঙ্গে তাদের দূরত্বও তৈরি হচ্ছে।

সক্রিয় দলগুলোর বড় অভিযোগ হচ্ছে, তাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়মিত, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগ নেই। যখন কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, তখন প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছেন। এ পর্যন্ত তিন দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে সরকারের।

বিএনপি, এর মিত্র দল ও জোটগুলো এবং জামায়াতে ইসলামী প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স চার মাস পার হওয়ার পর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের সময় নিয়ে একটা ধারণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়। এরপর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘আশা করতে পারেন যে নির্বাচন হচ্ছে ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে।’

তবে বিএনপি নেতৃত্ব মনে করে, নির্বাচনের জন্য লম্বা সময়ের প্রয়োজন নেই। তারা দ্রুত নির্বাচন চাইছে। এদিকে জামায়াতে ইসলামী সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন দাবি করছে। দেরিতে হলেও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্বাচনের কথা বলায় এটিকে রাজনৈতিক দলগুলো ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য স্পষ্ট নয় এবং সময় নিয়ে একটা ধারণা দেওয়ার ব্যাপারেও দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে তারা। এখন দলগুলো তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে রোডম্যাপ তৈরির দাবি করছে।

দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই সরকারকে পুরো সমর্থন দিয়ে আসছি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এ পর্যন্ত তিনবার বৈঠক করেছি। অনুরোধ করেছি, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেন যোগাযোগ রাখা হয় এবং নিয়মিত আলোচনা করা হয়। কিন্তু তা হয়নি। দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই নির্বাচনের একটা সময়ের কথা বলা হয়েছে। এসব দূরত্ব সৃষ্টি করছে।’

সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন প্রলম্বিত করার কোনো চিন্তা সরকারের ভেতরে কাজ করছে কি না, এমন সন্দেহও তৈরি হয়েছে দলগুলোর মধ্যে। কারণ, স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা নতুন দল গঠন করছেন। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো দল গঠন করা হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নও তুলেছে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল।

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নতুন দল গঠনের পেছনে সরকারের একাংশ আছে কি না এবং তাদের জায়গা করে দিতে নির্বাচন প্রলম্বিত করার চেষ্টা হতে পারে কি না—রাজনীতিতে এ আলোচনা আছে। আর এসব কারণে সরকারের প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে। ফলে দলগুলোর চিন্তা বোঝার জন্য তাদের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন।

বিএনপি কেন দ্রুত নির্বাচন চায়

বিএনপির দ্রুত নির্বাচনের দাবি নিয়েও কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও সরকার–সমর্থক কোনো কোনো মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা বক্তব্যে এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি দলের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে তাঁরা বারবার নির্বাচনের কথা বলবেন, নির্বাচন চাইবেন। এটাই স্বাভাবিক।

তবে দ্রুত নির্বাচন চাওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির ভেতরে নানা আলোচনা রয়েছে। দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করাসহ অর্থনীতিতে গতি আনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও প্রশাসনে স্থিতিশীলতা আনতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। আর এতে মানুষের মধ্যে সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। দ্রুত নির্বাচনের দাবির পেছনে এ পরিস্থিতিকেও অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। নির্বাচন যত দেরি হবে, সংকট ততই বাড়বে বলে মনে করেন বিএনপি নেতৃত্ব।

 ‘স্বতন্ত্র পলিসি ইউনিট গঠনের সুপারিশ-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, রাজস্ব খাত সংস্কারে গঠিত পরামর্শক কমিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রশাসন ও নীতি (পলিসি) উইং পৃথক করার বিষয়ে সুপারিশ করতে যাচ্ছে।

কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে এবং করদাতাদের সেবা নিশ্চিত করতে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তারাও চাইছেন পৃথক দুটি সংস্থার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে। কিন্তু বিপত্তি বেঁধেছে প্রশাসন ও নীতি বিভাগ আলাদা করার পর নীতি বিভাগে কোন ক্যাডারের কর্মকর্তারা কাজ করবেন, অফিস কোথায় হবে, পদমর্যাদা কী হবে। এ নিয়ে দুই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। দুই অ্যাসোসিয়েশন শ্বেতপত্রের সুপারিশ অনুযায়ী সংস্কার চাইছে।

জানা গেছে, রাজস্ব খাত সংস্কারে গঠিত পরামর্শক কমিটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার জন্য একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের খসড়া তৈরি করেছে। আজ কমিটির সদস্যরা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।

খসড়া প্রতিবেদনে আইআরডির অধীনে নীতি বিভাগ পরিচালনার রূপরেখা আছে। যদিও পরামর্শক কমিটিকে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে এবং করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে এনবিআরের সংস্কার চাইলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা পদ্ধতিতেই এ কাজ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে এনবিআরকে আইআরডির অধীন থেকে বের করে সরাসরি অর্থমন্ত্রী/অর্থ উপদেষ্টার অধীনে দুটি সংস্থা গঠনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। সংস্থা দুটির প্রধান হবেন কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

১৫ ডিসেম্বর দুই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পরামর্শক কমিটিকে একটি উপস্থাপনা দেওয়া হয়। এতে পার্শ্ববর্তী দেশ ও উন্নত দেশগুলো কীভাবে রাজস্ব আদায় করে তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

উপস্থাপনায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার চাপিয়ে দেওয়া সংস্কার মডেল বাংলাদেশের রাজস্ব খাতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যেমনটি হয়েছে শ্রীলংকার ক্ষেত্রে। দাতা সংস্থার পরামর্শে শ্রীলংকার রাজস্ব খাত সংস্কার করতে গিয়ে দেশটির কর-জিডিপি অনুপাত তিন বছরের ব্যবধানে ১১ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

প্রকৃত সংস্কারের জন্য এনবিআরের প্রশাসন ও নীতি উইং আলাদা করতে হবে। দুটো বিভাগই আইআরডির পরিবর্তে অর্থমন্ত্রী/অর্থ উপদেষ্টার অধীনে থাকবে। আর সংস্থা দুটির প্রধান হবেন কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা। করদাতাবান্ধব ও রাজস্ববান্ধব নীতি প্রণয়নের জন্য নীতি বিভাগে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবেন দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, হিসাববিদ, ব্যবসায়ী নেতা, গবেষণা কাজে যুক্ত ব্যক্তি, পেশাজীবী, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। পক্ষান্তরে প্রশাসনিক উইং রাজস্ব আদায়, নীতি বাস্তবায়নের কাজ করবে।

জানতে চাইলে রাজস্ব খাত সংস্কার কমিটির প্রধান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, এনবিআর নানা সমস্যায় জর্জরিত। তাই এনবিআর সংস্কারে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন একেবারে দেওয়া সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে কমিটি সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। সমস্যাগুলো দূর করতেও সরকারকে সংস্কার কাজ চলমান রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, সংস্কারে সুপারিশ দেওয়ার আগে ব্যবসায়ী নেতা/করদাতা ও কাস্টমস-আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হচ্ছে।

রোববার (আজ) কমিটির সদস্যদের একটি বৈঠক আছে। বৈঠকে সদস্যরা ঐকমত্যে পৌঁছলে এনবিআরের পলিসি ইউনিট পৃথক করার বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে দেওয়া হতে পারে। এই প্রতিবেদনে কীভাবে পলিসি ইউনিট আলাদা করা হবে, তার বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম গ্যাসের আকাল, শিল্পে বিপর্যয়। খবরে বলা হয়, চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস মিলছে না শিল্প-কারখানায়। বেশ কিছুদিন ধরে চলা এ সংকটে কমে গেছে শিল্প-কারখানার উৎপাদন। সিরামিক, ইস্পাত ও টেক্সটাইল খাতের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, গ্যাস সংকটে শিল্প খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। গত কয়েক মাসে কয়েক শ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। রপ্তানি আয় কমেছে। বিনিয়োগ থমকে আছে। কর্মসংস্থান বাড়ছে না।

শিল্প খাত না বাঁচলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি থেমে যাবে। তাই শিল্পের গ্যাস-বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে। উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা না গেলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কমার পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে ডলার সংকট তীব্র হবে।

উৎপাদন কমে যাওয়ায় শিল্পের কাঁচামালের আমদানিও কমেছে ৯.৮১ শতাংশ। শিল্প-কারখানার যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ ৪১ শতাংশ কমেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ায় শিল্প-কারখানা, সিএনজি স্টেশন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, আবাসিক খাতসহ সব ক্ষেত্রে এখন সংকট চলছে।

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও সাভার এলাকার শিল্প-কারখানায় চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ায় উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় এসব এলাকার শিল্প-কারখানা কখনো চলছে, কখনো বন্ধ থাকছে।

গ্যাসচালিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনের নিজস্ব ব্যবস্থা থাকলেও গ্যাসের সংকটে শিল্প-কারখানাগুলো সেগুলোও চালাতে পারছে না। এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে শিল্পোদ্যোক্তারা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি ও মুন্নু সিরামিকস ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চলা গ্যাস সংকটে সিরামিক খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এরই মধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে গ্যাসের স্বল্প চাপের কারণে গাজীপুর ও নরসিংদী অঞ্চলের কারখানাগুলোর ৫০ শতাংশ উৎপাদন কমে গেছে। তবে গ্যাসের চরম সংকট সাভার ও ধামরাই অঞ্চলের কারখানাগুলোতে। এসব এলাকার সিরামিক কারখানার উৎপাদন প্রায় ৭৫ শতাংশ কমে গেছে। যেহেতু দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না, এর পরও সরকার এলএনজি আমদানি বাড়াচ্ছে না। এতে বোঝা যাচ্ছে, এই গ্যাস সংকট দীর্ঘমেয়াদি হবে।’

দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘জাতিসংঘকে এখনও পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়নি সরকার। খবরে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে দু’দফা বাংলাদেশে আসে জাতিসংঘের তদন্ত দল। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর সরকারি বাহিনীগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে। তবে সরকারের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য না পাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে তারা প্রতিবেদন দিতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানায়। বিষয়টি সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার বলা হলেও অপরাধ এবং অনেক অপরাধীর তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগতা লক্ষ্য করা গেছে, যা মোটেও কাম্য নয়। এ কারণে তথ্যানুসন্ধান দল তাদের প্রতিবেদন শেষ করতে পারছে না। অবশ্য নতুন করে জানুয়ারির মধ্যভাগে প্রতিবেদন শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় প্রতিবেদনও অসম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।

চাহিদা অনুযায়ী জাতিসংঘকে তথ্য দিতে কিছুটা দেরি হয়েছে স্বীকার করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র তৌফিক হাসান। তিনি সমকালকে বলেন, ‘তথ্যানুসন্ধান মিশনের চাহিদার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বিভাগ থেকে যেসব তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেগুলো জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে।’

জানা যায়, তথ্যানুসন্ধানী দল জাতিসংঘের স্বীকৃত পদ্ধতি মেনে তদন্ত কার্যক্রম চালায়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়াও অনুসরণ করে। যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করবে, তার সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে। বাংলাদেশে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নৃশংস ঘটনার মূল উৎস বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশ করে ডিসেম্বরের শুরুতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে চেয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিনিধি দল। কিন্তু তা হয়নি। এখন তারা জানুয়ারির মাঝামাঝি প্রতিবেদন জমার লক্ষ্যে কাজ করছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের আমন্ত্রণে আগস্টের শেষ দিকে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঢাকায় আসেন মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের তিন সদস্য। তারা কীভাবে কাজ করবেন, কী সহযোগিতা লাগবে– তা সরকারকে জানান। একই সঙ্গে বাংলাদেশের চাহিদা সম্পর্কে জেনে অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা সারে। এর পর মূল তদন্ত দল ঢাকায় আসে সেপ্টেম্বরে। চার সপ্তাহ বিভিন্ন জেলা সফর করে মাঠ পর্যায়ের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ফিরে যায়।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ইসির পরিকল্পনায় ডিসেম্বর ২০২৫। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসকে সামনে রেখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ প্রস্তুতির কাজও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরর আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা দিয়ে প্রস্তুত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তুতি নিলেও সরকারের একটি পক্ষ ২০২৬ সালের ৩০ এপ্রিল নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর। তারা ২০২৬ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছে।

তবে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সমমনা দলগুলোর সঙ্গে দলটি সিরিজ বৈঠক শুরু করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এ ধরনের বাস্তবতায় নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে নির্বাচন কমিশন কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকলেও ডিসেম্বরকে টার্গেট করে অগ্রসর হচ্ছে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ ইত্তেফাককে বলেন, ‘২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে ধরেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। রোডম্যাপ ঘোষণার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনে কোনো সমস্যা হবে না।’

গত বুধবার দেশের ১০ অঞ্চল ও ৬৪ জেলার নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইনে অনুষ্ঠিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। সিইসি বলেন, ‘আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন করার সম্ভাব্য ডেডলাইন। তাই চলমান কর্মযজ্ঞ সমুন্নত রাখতে যার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা আছে, সেগুলো আপনারা সঠিকভাবে এবং যথাযথভাবে পালনে সচেষ্ট থাকবেন। এই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে মাঠ পর্যায়ে কেউ বাধার সম্মুখীন হতে পারেন। যদি কেউ এ ধরনের সংকটে উপনীত হন, তাহলে তাত্ক্ষণিক আমাদের জানাবেন, আমরা আইন ও বিধির আলোকে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।’

ইসি সূত্রে জানা গেছে, তিন মাসের সময় দিয়ে যে কোনো সময় জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের জন্য যথেষ্ট। সাংবিধানিকভাবে সাধারণত যে কোনো নির্বাচন আয়োজনে তিন মাসের সময় পায় কমিশন। বিদ্যমান সংবিধানের ১২৩ (খ) বলা আছে, ‘মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’ যেহেতু বর্তমানে সংসদ নেই, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। এই সরকারের মেয়াদও অনির্ধারিত। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান ছবিসহ ভোটার তালিকার বিষয়ে সঠিক পরামর্শ পাননি প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজটিও কঠিন নয়। আমাদের যে ভোটার তালিকা তা ত্রুটিপূর্ণ নয়।’

 

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর

বিভাগীয় সংবাদ