২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Search
Close this search box.

‘সবার সামনে কঠিন পথ: শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আহাদ চৌধুরী তুহিন,অমৃতালোক:

আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর’২০২৪) আজকের পত্রিকার শিরোনাম ‘সবার সামনে কঠিন পথ: শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা‘। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের চাপ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে ফেরত পেতে কূটনৈতিক পত্র দেওয়া হয়েছে ভারতকে। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, তাঁকে আনা গেলে বিচারের কাজটি ভালোভাবে এগিয়ে নেওয়া যাবে।

তবে দুই দেশেই সরকারের ভেতরের ও বাইরের বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শেখ হাসিনা নিজে থেকেই দেশে ফিরে যে বিচারের মুখে পড়তে চাইবেন—এমন ইঙ্গিত এখনো মিলছে না। আইনি সব জটিলতা মিটিয়ে তাঁকে ফেরত আনা সফল করতে হলে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। আর হাসিনাকে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া ভারতের জন্য মোটেও সহজ নয়। সব মিলিয়ে তাঁকে ফেরত এনে তাঁর উপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করা একটি জটিল, সময়সাপেক্ষ, এমনকি প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার।

হাসিনাকে ফেরতের বিষয়টিতে দুই দেশেই অভ্যন্তরীণ রাজনীতির যোগসূত্র থাকার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, এমনকি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে—এমনটি মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার মহেশ সাচদেব ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে গত সোমবার বলেছেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য দেওয়া কূটনৈতিক পত্র একটি সূচনামাত্র। আর তাঁকে ফেরত চেয়ে যে অনুরোধ করা হয়েছে, সে অনুরোধের বিরুদ্ধে তিনি চাইলে আদালতে যেতে পারেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, সরকারি চ্যানেলে নয়াদিল্লি থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো জবাব আসেনি।

সরকার ভারতের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করবে, এমনটি জানিয়ে রফিকুল আলম বলেন, ‘যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো উত্তর না আসে, তবে বাংলাদেশ থেকে একটি অনুস্মারক চিঠি পাঠানো হবে।’

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবি: বিএনপিসহ একাট্টা হচ্ছে মিত্ররা। এটি যুগান্তরের শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে একাট্টা হচ্ছে বিএনপিসহ মিত্ররা। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন চায় দলগুলো। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচনমুখী সংস্কার চান। বাকি সংস্কারগুলো পরে নির্বাচিত সরকার সংসদে আলোচনা করে চূড়ান্ত করার পক্ষে দলগুলো। এজন্য সংস্কারে বেশি সময় না নিয়ে অবিলম্বে নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা চান নেতারা। জানুয়ারির মধ্যে এ ঘোষণা দেওয়া না হলে যুগপৎ আন্দোলনের কথা ভাবা হচ্ছে।

রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেন, মাঠের কর্মসূচি দেওয়ার লক্ষ্য হবে ভোটের আবহ তৈরি এবং সরকারের ওপর নির্বাচনি চাপ বাড়ানো। নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা সংশয়-সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গত কয়েকদিন ধরে ২৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন চায় দলগুলোর নেতারা। এসব বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির এক সদস্য যুগান্তরকে বলেন, সভা-সমাবেশে যে যা-ই বলুক না কেন, ভোটের অধিকারের প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ। দীর্ঘ ১৫ বছর ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়েছে। এখন সেই ভোটের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখনো যদি ভোটের জন্য রাস্তায় নামতে হয়, তবে তা খুবই দুঃখজনক হবে। তাহলে বুঝতে হবে মৌলিকভাবে কোনো কিছু পরিবর্তন হয়নি। সুতরাং আশা করব রাজনৈতিক দলগুলোকে রাস্তায় নামতে হবে না। সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নেবে এবং আগামী বছরের মধ্যই জাতীয় নির্বাচনের উদ্যোগ নেবে।

তবে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ব্যর্থতাও চায় না। বিএনপি নেতারা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে দেশে এমন প্রেক্ষাপট তৈরি হবে, যা নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে পারে। এ বিষয়ে কয়েকটি দল ও মহলের কর্মকাণ্ড বিএনপি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিএনপি মনে করছে, কোনো কোনো মহল সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ে এক জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও আন্দোলনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তিনি সভায় উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কি সত্যি সত্যি পরিবর্তন চান নাকি আবার ওই আওয়ামী লীগের নৌকায় ফিরে যেতে চান। যদি পরিবর্তন চান তবে ৫ আগস্ট আপনারা যেমন রাস্তায় নেমেছিলেন, আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য রাস্তায় নামতে হবে।’

কালের কণ্ঠের শিরোনাম  ‘চড়া খাদ্যমূল্যে কষ্ট বেড়েই চলেছে‘। খবরে বলা হয়, প্রায় দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মিলল প্রত্যাশার পণ্য—দুই কেজি ডাল ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল। ৩২০ টাকায় এই খাদ্যপণ্য দুটি পেয়ে রঞ্জিত দাসের (৫৫) শুকনো মুখে হাসি ফুটল। চলতি বাজারমূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে টিসিবির তেল-ডাল পেয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট ভুলেছেন তিনি।

গত রবিবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় রঞ্জিত দাসের সঙ্গে কালের কণ্ঠের এই প্রতিবেদকের কথা হয়।

জানা গেল, রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি পোশাক কারখানায় আয়রন সেকশনে কাজ করছেন রঞ্জিত দাস। ২০ হাজার টাকা বেতনে দুই সন্তান আর স্ত্রীকে কোনোমতে টেনেটুনে চলছে তাঁর সংসার। তিনি রামপুরার উলন এলাকায় টিনশেডের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে তাঁকে হিমশিম খেতে হয় বলে জানালেন।

কালের কণ্ঠকে রঞ্জিত দাস বলেন, ‘আমার আয়ের বড় একটি অংশ বাসাভাড়া এবং দুই সন্তানের পড়াশোনায় চলে যায়। গত কয়েক বছরে যে হারে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, ইচ্ছা করলেও ছেলেমেয়ে নিয়ে ভালোমন্দ কিছু খেতে পারি না। জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকম সংসারটা চালিয়ে নিচ্ছি। প্রতি মাসেই কয়েক হাজার টাকা ঋণ করতে হয়।

এভাবে আর পারছি না। কিছু টাকা বাঁচানোর আশায় টিসিবির লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি।’
টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইনে এক বছরের বাচ্চা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন রুনা লায়লা (২৫)। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘দুই সন্তানসহ আমাদের ছয় সদস্যের পরিবার। স্বামী বনশ্রী গুদারাঘাটে ম্যাক অ্যাকসেসরিজ কম্পানিতে ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন।

আমি দুটি টিউশনি করে তিন-চার হাজার টাকা আয় করি। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই আয় দিয়ে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস বিলসহ বাসাভাড়ায় সাড়ে আট হাজার টাকা চলে যায়। বাচ্চাদের দুধ কিনে খাওয়াতে পারছি না। এখন মাসে দু-একবার পাঙ্গাশ ছাড়া অন্য মাছ খাওয়ার সুযোগ হয় না। ডিম, ডাল ও কম দামের সবজি খেয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছি। সামনের দিনগুলোতে যে কিভাবে চলব, বুঝতে পারছি না।’
রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ১৩-১৪ বছর ধরে রিকশা চালান মো. জাহাঙ্গীর। তিনি ওই এলাকার একটি গ্যারেজে থাকেন। দুই সন্তান নিয়ে স্ত্রী নীলফামারীতে থাকেন।

কালের কণ্ঠকে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইয়া সংসারের খরচ সামাল দিয়া এলাকায় কৃষিজমিও কিনছি। এহন জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে আগের চেয়ে বেশি আয় করেও সংসার চালাইতে পারি না। সারা দিন রিকশা চালাইলে  আট-নয় শ টেকা আহে। সব খরচ বাদে পাঁচ-ছয় শ টেকার মতো থাহে। এই দিয়া ছাওয়াল দুইডার পড়ার খরচ আর পরিবার চালানো খুব কঠিনই।’

রঞ্জিত, রুনা আর জাহাঙ্গীরের মতো এমন আরো অনেকে খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এমনকি নিম্ন মধ্যবিত্ত আর মধ্যবিত্তরাও ভালো নেই। তাদের সমস্যা হলো আত্মসম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইনে তারা বেশির ভাগই দাঁড়াতে পারে না।

বেশ কয়েক বছর ধরেই খাদ্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া। গত চার বছরে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, চাল, ডাল, রসুন, আলু, ব্রয়লার মুরগি ও ডিম—এই আট পণ্যের দাম সর্বোচ্চ ১৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সে তুলনায় সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার এর মধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভিন্ন পণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে, আমদানি শুল্ক কমিয়ে বাজারদর নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু পণ্যের উচ্চমূল্য অনমনীয়, কিছুতেই নামছে না। ভোক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাজারে দ্রুত স্বস্তি ফেরানোর আহবান জানিয়ে আসছে বারবার।

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১৪ শতাংশ। যদিও অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, বর্তমানে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি বিবিএসের তথ্যের চেয়ে বেশি।

ইত্তেফাকের শিরোনাম ‘নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই, ৭ লাখ কপি বাতিল‘ ।  খবরে বলা হয়, বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ও (এনসিটিবি) ১১৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

বইয়ের মান নিয়ে যেহেতু আপস হবে না, এটা বুঝতে পেরে এবার ১১৬টি প্রেসই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিন্ডিকেট করে। প্রায় ৪০ ভাগ টেন্ডারে একজনের বেশি টেন্ডার জমা দেয়নি।

এই সিন্ডিকেটের কারণে বইয়ের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৬ থেকে ২০ শতাংশ।

তার পরও অধিক মুনাফার লোভে রাতের আঁধারে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপাচ্ছে কিছু ছাপাখানা।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা গত এক মাসে ছাপাখানাগুলো পরিদর্শনে গিয়ে নিম্নমানের কাগজে ছাপানো বই হাতেনাতে ধরেন। কোনো ছাপাখানায় বইয়ের কাগজ নিম্নমানের। আবার কোনোটির বইয়ের বাইন্ডিং ঠিক নেই। কিছু ছাপাখানায় কাগজের বাস্টিং ফ্যাক্টর কম, বইয়ের সামনের ও পেছনের মলাট খুলে যাচ্ছে।

এমন সাত লক্ষাধিক নিম্নমানের পাঠ্যবই ও বইয়ের ফর্মা কেটে বিনষ্ট করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ইত্তেফাককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর

বিভাগীয় সংবাদ