আহাদ চৌধুরী তুহিন,অমৃতালোক :
আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর)দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম র্যাবের বিলুপ্তি ও পুলিশ কমিশন চায় বিএনপি। এতে বলা হয়, দুই দশক আগে বিএনপি সরকারের সময় দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে গঠিত বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ইউনিট র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের বিলুপ্তি চেয়েছে দলটি।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির গঠিত পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিটির প্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ সুপারিশমালা তুলে ধরেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেনের কাছে পুলিশকে জনবান্ধব ও মানবিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে ‘পুলিশ কমিশন’ গঠন এবং ‘র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিলুপ্তি চেয়ে এ সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাব ও সুপারিশ জমা দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি নিজেদের আমলে গঠিত এই বাহিনীকে সংস্কার না করে কেন বিলুপ্ত করতে চায়, প্রশ্ন করা হলে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, র্যাব আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছে, আর দেশে তো র্যাব মানেই একটা দানব তৈরি করা হয়েছে। যত ধরনের খুন-গুম, যত এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং (বিচারবহির্ভূত হত্যা), অধিকাংশই এই র্যাব বাহিনীর মাধ্যমে হয়েছে। সে জন্য আমরা এটিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছি।
সাবেক ৭৬৪ কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ— প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এতে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে বঞ্চিত দাবি করে যেসব অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্য থেকে ৭৬৪ জনকে পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত কমিটি। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে অবসরে যাওয়া এসব কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি গতকাল মঙ্গলবার তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান জাকির আহমেদ খান অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এই প্রতিবেদন জমা দেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ১৬ সেপ্টেম্বরসাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলো।
প্রসঙ্গত, এত বিপুলসংখ্যক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিকট অতীতে এভাবে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়নি।
হাসিনার বিচার দাবিতে প্রকম্পিত সোহরাওয়ার্দী— এটি নয়া দিগন্ত পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এতে বলা হয়, হাজার হাজার স্বজনহারার কান্না আর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে গতকাল প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশে গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ এ দাবি তোলেন।
নিহত আর নিখোঁজদের স্বজনের বিচার দাবির এই সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে ২০০৬ সালের লগি-বৈঠা তাণ্ডব থেকে শুরু করে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর হত্যাযজ্ঞ এবং জুলাই গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
একই সাথে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে সব দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করারও আহ্বান জানান তারা। তাদের দাবি, সাড়ে ১৫ বছরে ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত সব হত্যা গুম নির্যাতনের বিচার করতে হবে। তারা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা এখনো প্রতিটি সেক্টরে অবস্থান করছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে।
মামলামুক্ত হতে আর কত অপেক্ষা– বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই খবরে বলা হয়, মামলা থেকে মুক্ত হতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আর কত অপেক্ষা? অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর অনেকে মামলা থেকে খালাস পাচ্ছেন। গত ফ্যাসিস্ট সরকার ১৫ বছরে রাজনীতিবিদসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে অসংখ্য মামলা দিয়েছিল। এসব রাজনৈতিক মামলায় যারা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী ছিলেন তারা হলেন- বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের চার মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো মামলামুক্ত হতে পারেননি বাংলাদেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার সন্তান মামলার কারণে দেশান্তরী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যে কারণে দলের লাখ লাখ নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন, মামলামুক্ত হতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীসহ দেশবাসী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চায়। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে এখনো ছয় থেকে সাতটি মিথ্যা মানহানি মামলা চলমান রয়েছে। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা চলমান। পাশাপাশি বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের (প্রায়) ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৪ লাখ মামলাও সেই একই তিমিরে রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা এসব মামলা প্রত্যাহার চাই।
সরকারি চাকরিতে সরকারই উদাসীন। এটি দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। এই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদে প্রায়ই শূন্যপদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়। এরপর টানা কয়েক দিন সরকারি দপ্তরে, অভিভাবক মহলে আর বেকারদের আড্ডায় শূন্যপদ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মনে করে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো কাজ করে না বলেই যোগ্য লোক পাওয়া যায় না। অভিভাবক তুলোধুনো করে বেকার ছেলেকে। আর বেকার ভাগ্যকে দোষারোপ করে।
এখন সংসদ নেই। তাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেই শূন্যপদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সব মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন সংস্থার মহাপরিচালক, করপোরেশনগুলোর চেয়ারম্যান, রেক্টর, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জনবল নিয়োগে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার। একই সঙ্গে লোক নিয়োগের কাজ বেগবান করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি শূন্যপদে জনবল নিয়োগে কাজ জোরদার করার জন্য পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সময়ের জনপ্রশাসন সচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমদের চিঠিতেও ১৫ দিনের সময় দিয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর সেই সময়ের জনপ্রশাসন সচিব কেএম আলী আজমও একই ধরনের চিঠি পাঠান উল্লিখিত দপ্তরগুলোতে।
একজন সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, বেকারদের এ দেশে শূন্যপদ একটা লোভনীয় বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলো চায় এ ইস্যুটা পুঁজি করতে। তাই তারা কয়েক দিন পরপরই শূন্যপদ পূরণের জন্য চিঠি পাঠাতেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এটা দরকার ছিল না। এ সরকারের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ বিশেষ কিছু চায়। সরকার এক বছরে গড়ে ৪০ হাজারের বেশি শূন্যপদ পূরণ করতে পারে না। এ সরকারও পারবে না। পারতে হলে নতুন কিছু করতে হবে, তা না করে গতানুগতিক ধারায় হাঁটছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
শূন্যপদ পূরণের এ উদ্যোগ কি লোকদেখানো জানতে চাওয়া হয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার কাছে। জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, লোকদেখানো কি না, তা বলতে পারব না। তবে সরকারি চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার উদাসীন। অনেক সচিব চান না তার সময়ে লোক নিয়োগ হোক। কারণ এ প্রক্রিয়া শুরু হলেই প্রথম চাপটা আসবে মন্ত্রীর কাছ থেকে।
Border security beefed up as fresh influx feared— নিউ এজ পত্রিকার এই প্রধান শিরোনাম এটি। এতে বলা হয়, নতুন অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার।
কারণ গত রোববার মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দাবি করেছে যে রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পশ্চিমাঞ্চলে থাকা দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের শেষ ঘাঁটি দখল করেছে।
ফলে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের নতুন করে প্রবেশের ঝুঁকি আরও বাড়াবে।
মঙ্গলবার স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তারা সীমান্ত ও নাফ নদী দিয়ে অনুপ্রবেশ, বিশেষ করে মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রবেশ রোধে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের পক্ষে মত— সমকাল পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। খবরে বলা হয়, সংবিধান সংস্কার কমিশনের উদ্যোগে পরিচালিত জনমত জরিপে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা চালুর পক্ষে মত দিয়েছে বেশির ভাগ মানুষ।
একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ দুইবার থাকার পক্ষে মত এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারসাম্য আনতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন উত্তরদাতারা। সাধারণ নাগরিকের মতামত গ্রহণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে এ জরিপ চালানো হয়।
এতে আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচন, সংবিধান সংশোধনে গণভোটের বিধান, বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থানান্তর, উপজেলা স্তরে আদালত স্থাপনসহ ২১টি ইস্যুতে প্রশ্ন ছিল। পাঁচই ডিসেম্বর শুরু হওয়া এ জরিপ গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে।
বিবিএস সূত্র জানায়, জরিপের মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী রোববারের মধ্যে ফল চূড়ান্ত করা হতে পারে। ২১ প্রশ্নের মধ্যে ‘নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা চালুর’ পক্ষে সর্বোচ্চ মত পাওয়া গেছে। অন্যান্য প্রশ্নে পক্ষে-বিপক্ষে প্রায় কাছাকাছি মত এসেছে।