২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Search
Close this search box.

মিডিয়া ওয়াচ:হাসিনাকে ফেরাতে নীলনকশা দিল্লিতে !

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আহাদ চৌধুরী তুহিন,অমৃতালোক:

আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্ভর) দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর  হাসিনাকে ফেরাতে নীলনকশা দিল্লিতে ! প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারেরকার্যক্রম চলমান রয়েছে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চিহ্নিত সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ দেড় শ’র বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন সাবেক ১০ মন্ত্রীসহ ২৫ জন।

এরই মধ্যে দেশকে অস্থিতিশীল করে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিশেষ করে চলতি মাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করছে একটি চক্র। ওই চক্রটি প্রতিবেশী দেশে বসে বাংলাদেশের সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে নতুন পরিকল্পনা করছে। তারা ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে আগামী ২০ জানুয়ারির পর ভয়ঙ্কর নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে পুরোদমে মাঠে নেমে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করবে। সম্প্রতি দেশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমন তথ্য দেন।

ওই কর্মকর্তারা বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুষ্কৃতকারীদের মাধ্যমে কিলিং মিশনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে এরই মধ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নাগরিকরা অনুপ্রবেশ করে শিক্ষার্থী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্ঘবদ্ধ করছে। তাদের এই পরিকল্পনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী (বাংলাদেশ থেকে এখনো যারা পালাতে পারেনি বা আত্মগোপনে রয়েছে), তাদের সাথে যোগাযোগ করে ২০ জানুয়ারির পর ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশী হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী, যারা প্রতিবেশী দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে লেখাপড়া করছেন এবং বাংলাদেশে যারা রয়েছেন তাদের সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিপিএন ব্যবহার করে নিয়মিত যোগাযোগ চলছে।

সম্প্রতি তদন্তে আরো বেশ কিছু ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। তার মধ্যে রয়েছে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও কিছু স্থানে বাংলাদেশী হিন্দু শিক্ষার্থীদের জমায়েত। সেখানে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. প্রেরণা মালহোতরা রয়েছেন যিনি বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বিষয়ে জুলাই-আগস্ট থেকে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। গত ৩০ নভেম্বর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে একটি সমন্বয়মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ প্রকল্পের সাথে ওতপ্রোতভাবে কাজ করছে ভারতের কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন আরএসএস ও সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাসি, বহুত্ববাদ এবং মানবাধিকার নামের একটি এনজিও। মূলত ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অর্থায়নেই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে। এখানে বাংলাদেশ থেকে পড়তে যাওয়া হিন্দু শিক্ষার্থীদের জমায়েত করা হচ্ছে।

কয়েকটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, কোনো মুসলিম শিক্ষার্থীকে একাজে বা এই দলে সম্পৃক্ত করা হয়নি। জানা গেছে, ড. প্রেরণা মালহোতরার টিমে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন দুইজন হিন্দু সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক। তারা নিয়মিত যোগাযোগ করছেন বলেও জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।

গোয়েন্দা সূত্র আরো জানিয়েছে, দিল্লিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বড় অংশ পড়াশুনা করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজে। বিশ্বস্ততার জন্য তারা বেছে নিয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়কে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইভাবে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। প্রথমত, ভারতের মিনিস্ট্রি অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পূর্ণ ব্যবস্থাপনায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিলর ফর কালচারাল রিলেশন্সের (আইসিসিআর) বৃত্তি নিয়ে। দ্বিতীয়ত, নিজ খরচে আইসিসিআর বৃত্তিপ্রাপ্ত।

এসব শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে এ সব শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই হিন্দু। অর্থাৎ সিলেকশন প্রক্রিয়াতেই এ ধরনের পক্ষপাত করা হয়। সার্বিক বিবেচনায় দিল্লিতে এ ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা খুব সহজ কাজ হয়।

৯ ডিসেম্বর প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় হিন্দু সমাবেশ : বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যে জানা গেছে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিকে টার্গেট রেখে নাশকতার পরিকল্পনা ও ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির নীলনকশায় প্রাথমিকভাবে জমায়েতের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশী হিন্দু শিক্ষার্থীরা। ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় বাংলাদেশী হিন্দু শিক্ষার্থীরা একটি বড় জমায়েত করার পরিকল্পনা করছে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া খবরে জানা গেছে, দিল্লির ওই বড় জমায়েতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যাওয়া হিন্দু শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করবে। এমনকি ওই জমায়েতে ভারতের কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন আরএসএসের সদস্যরাও থাকবে।

এদিকে শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসাথে শেখ হাসিনা আগে যত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, তা সব মাধ্যম থেকে সরাতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন আদালত। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে নানা কটূক্তি করেন ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা, যা বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া নেতাকর্মীদের সাথে ফোনে কথা বলে সেই বক্তব্য আবার নিজেই ছড়িয়ে দিতে বলছেন। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে নারায়ণগঞ্জে গতকাল এক অনুষ্ঠানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমার মনে হয়, তার (মমতা) দেশেই শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রয়োজন। তার দেশে সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হচ্ছে। এ জন্যই মনে হয়, তিনি তার দেশের জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী চাচ্ছেন। ভারতের কিছু মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে, এটার জবাব এদেশের গণমাধ্যমে আপনারা দিতে পারেন সত্য ঘটনা প্রকাশ করে।’

জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে সংলাপ নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর শান্তিসম্প্রীতির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনীতিকদের পর ধর্মীয় নেতারাও দেশে শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীন অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এ প্রশ্নে তাঁরা দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থেকে সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে দেশের বিশিষ্ট আলেম, ইসলামি বক্তা এবং হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টধর্মের নেতারা এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে চারটায় সংলাপ শুরু হয়ে সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় শেষ হয়।

দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা গতকাল সব ধর্মের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আগের দিন বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এবং মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে ‘জাতীয় ঐক্যের’ লক্ষ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শেষ হবে বলে জানা গেছে।

গতকাল সংলাপের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা ধর্মীয় নেতাদের খোলাখুলিভাবে আলোচনার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, প্রকৃত খবরটা জানতে হবে। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

এত বড় দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে হবে, যাতে তাৎক্ষণিক সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই হোক, দোষী দোষীই। তাকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।

 ‘উলটা স্রোতে মূল্যস্ফীতি-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, শীতে শাকসবজিসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের উৎপাদন বাড়ে। সরবরাহ পরিস্থিতিও থাকে স্বাভাবিক। ফলে পণ্যের দাম কমে। এতে মূল্যস্ফীতিও কমে যায়। কিন্তু এবার হয়েছে উলটো চিত্র। শীতের সবজির ভর মৌসুমেও খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।

দেশে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে; কিন্তু দাম কমছে না। মূলত খাদ্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হারও ধারাবাহিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অর্থাৎ ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে উঠেছে। শহরে এ হার ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশে উঠেছে।

এদিকে মজুরি বাড়ার হার একেবারেই কম। এ হার বেড়ে ৮ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছে। মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে বেশি। নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে দশমিক ৫১ শতাংশ। এর বিপরীতে মজুরি বেড়েছে দশমিক ০৩ শতাংশ। এছাড়া মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি অর্থাৎ ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ মানুষের জীবিকানির্বাহের ক্ষেত্রে ওই পরিমাণে ঘাটতিতে রয়েছে। ঘাটতি অর্থ ঋণ করে সংসার চালাচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, গত মাসে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর আগের মাসে অর্থাৎ অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

অর্থাৎ খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহের ভর মৌসুমে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের চেয়ে খাদ্যপণ্যের দাম বেশি বাড়ছে। ফলে খাদ্যবহির্ভূত খাতের চেয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হারও বেশি বেড়েছে। এদিকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অর্থাৎ গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় গত নভেম্বরে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

বিদ্যুতে শ্বেতহস্তীরামপালে সুন্দরবনের সর্বনাশ-এটি দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা পশুর নদে সাত-সকালে মাছ ধরছিলেন মুজাহিদ হোসেন। মাছ কেমন পাচ্ছেন- প্রশ্ন করতেই শোনা গেল তাঁর বারুদ-কণ্ঠ। বললেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র মহাসর্বনাশ করে দিয়েছে। ঘণ্টা তিনেক বসে কিছু মাছ পেয়েছি। এখন নামতে হবে মাছ বেচার যুদ্ধে। কেউ পশুর নদের মাছ কিনতে চায় না।’ কেন এ পরিস্থিতি-এমন প্রশ্নে হাতের ইশারায় দেখালেন একটু দূরে ধোঁয়া ওঠা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুউচ্চ চিমনি। এলাকা ঘুরে পাওয়া গেল মুজাহিদের কথার সত্যতা।

বছর পাঁচেক আগেও এসব এলাকা মুখর থাকত পাখির কূজনে। এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিছু দূরের গাছপালাও হয়ে গেছে বিবর্ণ। গাছে গাছে কমেছে নারকেল-সুপারি। বাড়িতে পোষা হাঁস-মুরগি সব সময় থাকে মরমর! বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের নদী-জলাশয়ের মাছও হয়ে গেছে ‘বিষ’। ঘরে ঘরে অসুখ-বিসুখ তো লেগেই থাকে।

সরকারি সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, পরিশোধন ছাড়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহৃত পানি ছাড়া হচ্ছে পাশের নদীতে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কয়লা ও উৎপাদিত ছাই নিয়মিত দূষণ করছে আশপাশের পানি, মাটি ও বায়ু। ফলে এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেট, পারদসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে জলজ, বনজ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর। সংকটে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন।

শুধু পরিবেশ কিংবা প্রতিবেশ নয় ১৬ হাজার কোটি টাকার ভারত-বাংলাদেশের যৌথ মালিকানার কয়লাচালিত কেন্দ্রটি দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়েছে দাঁড়িয়েছে। অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনায় চালুর পর থেকেই পূর্ণ ক্ষমতায় খুব কম চলেছে কেন্দ্রটি। নিম্নমানের যন্ত্রপাতির কারণে বন্ধ হচ্ছে বারবার। গত অর্থবছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতার মাত্র ২৪ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে। এ কেন্দ্রের জন্য গত অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা।

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর বিগত সময়ে নিয়োগকৃত ৩৬ সচিব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে। খবরে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলেও জনপ্রশাসন এখনো দলটির সমর্থিত আমলাদের নিয়ন্ত্রণে। বিগত আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া ৩৬ জন সচিব বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত রয়েছেন। এদের বেশির ভাগই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন আয়োজনের কুশীলব ছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের একজন সাবেক নারী সংসদ সদস্যের স্বামী এখনো সচিব পদে বহাল রয়েছেন।

জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনপ্রশাসন কার্যত আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী আমলাদের নিয়ন্ত্রণে। বিগত ১৮ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী আমলারা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কারণে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক নিয়োগেও তাদের প্রাধান্য ছিল। এসব আমলাদের কারণে প্রশাসনের কার্যক্রমে গতি ফিরছে না।

সম্প্রতি ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে এক মতবিনিময়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, আগের শাসকের ব্যুরোক্রেসি (আমলাতন্ত্র) রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলাতন্ত্র পালটাতে আবার তাদেরই অনুগতদের প্রশাসনে বসানো হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৭৮টি সচিব পদের বিপরীতে বর্তমান সরকারের ৯০ জন সচিব রয়েছেন। এর মধ্যে ৭২ জন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে সচিব হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এই ৭২ জনের মধ্যে ৩৬ জনই বিগত আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া সচিব। বাকি ৩৬ জনের মধ্যে আবার ১৩ জনকে চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৯০ জন সচিবের মধ্যে ১৮ জন ওএসডি।

প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতে গত ১৫ বছরে প্রায় সবই দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিছু লোক ঢুকে পড়েছে যারা কোনোমতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তারা নানা কায়দা-কানুন করে চাকরিতে ঢুকেছে। কিছু লোক টাকার বিনিময়ে ঢুকেছে। প্রশাসনের জানামতে ভিন্নমতের লোকদের চাকরিতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কেউ কেউ মেধার জোরে চাকরি পেলেও পুলিশ ভেরিভিকেশনের নামে চাকরিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আর ভিন্নমতের যারা ছিলেন তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়। পটপরিবর্তন হলেও জনপ্রশাসনে বাস্তবে কোন পরিবর্তন আসেনি।

বিগত ১৫ বছরের সুবিধাভোগীরাই এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদের কারণে কার্যত সারাদেশে পতিত ফ্যাসিবাদ সমর্থিতরা পুনর্বাসিত হচ্ছে। সরকারের নানা কর্মকাণ্ড কৌশলে তারা ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। সচিবালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছে সহসাই পৌঁছে যাচ্ছে। বিগত বড় বড় দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ফাইলপত্র সরিয়ে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে। পদবঞ্চিতরা এখনো পদবঞ্চিত হিসেবেই আছেন। অদৃশ্য কারণে সচিব পদে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের প্রতি আস্থা রাখার কারণে নানা ধরনের সংকটও দেখা দিচ্ছে।

ডেইলি স্টার

দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘We need accurate info for taking prompt action’ অর্থাৎ ‘দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের সঠিক তথ্য দরকার’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার তথ্য পেতে ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার।

তিনি বলেন, প্রকৃত তথ্য এবং বিদেশি মিডিয়া যা রিপোর্ট করছে তার মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে এক সংলাপে তিনি বলেন, আমরা সঠিক তথ্য চাই এবং তথ্য পাওয়ার একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে অবিলম্বে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলছি। আমরা সবাই একমত যে আমাদের সম্প্রীতি আছে। অন্যদিকে সম্প্রীতির পাশাপাশি আমাদের মনেও ভয় আছে।

 ‘জাতীয় ঐক্যে এক জাতীয় সরকারে নয়-এটি দৈনিক দেশ রূপানন্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান। এই লক্ষ্যে তিনি রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সবাই প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। এই ঐক্যের আহ্বানকে বিভিন্ন মহলে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তুতি হিসেবে গুঞ্জন তুলেছে। তবে এ ধরনের সরকার গঠনের সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।

জানা গেছে, বিএনপি ত্রয়োদশ নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের পক্ষে। তার আগে এ ধরনের জাতীয় সরকার গঠনের পক্ষে দলটির সায় নেই। বরং দলটি ন্যূনতম সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের অংশ হিসেবে ‘সংকট মোকাবিলায়’ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরামর্শ নিতে ‘জাতীয় কাউন্সিল বা নিরাপত্তা কাউন্সিলে’র যে প্রস্তাব এসেছে, সেটি ভেবে দেখা যায় বলে বিএনপি ও তার জোটসঙ্গীদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

দলগুলোর নেতাদের মত হচ্ছে, গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংকটে যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছেন, সেটিকেই সাংগঠনিক ভিত্তি দিয়ে ‘জাতীয় কাউন্সিল’ বা ‘নিরাপত্তা কাউন্সিল’ বা অন্য যেকোনো নামই দেওয়া যেতে পারে। কোনোভাবেই সেটি বর্তমান সরকারের অংশ হয়ে কাজ করার সুযোগ নেই।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। জাতীয় প্রয়োজনে যখনই বিএনপিকে ডাকা হবে, বিএনপি তাতে সাড়া দেবে। এজন্য জাতীয় সরকার গঠনের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি না। সরকারের উচিত, জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে দিতে অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা। এই রোডম্যাপ ঘোষণা হয়ে গেলে জনগণ নির্বাচনমুখী হবে। তখন যেসব ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে, সেটি কেউ করতে সাহস পাবে না।’

 

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর

বিভাগীয় সংবাদ