নিউজ ডেস্ক,অমৃতালোক :
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তাই ঢাকা এবং বৃহত্তর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে ভারতের প্রভাব বিস্তার করার পরিকল্পনা ধাক্কা খেতে পারে। গত বছর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি আলোচনা চালিয়েছে চীন। এদিকে হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ-ভারত ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব উপভোগ করে আসলেও বর্তমানে এ দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায় আগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা। দিল্লিতে হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া, ঢাকার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হস্তান্তর না করা এবং ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর সহিংসতা বৃদ্ধির একের পর এক প্রতিবেদন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও খারাপ দিকে নিয়ে গেছে।
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক তক্ষশীলা ইনস্টিটিউশনের চীন বিষয়ক বিশ্লেষক রক্ষিত শেঠি বলেছেন- ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বেইজিংয়ের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে সবুজ রপ্তানি বাড়াতে চীনের সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব করেছে বেইজিং। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ফেলো জোশুয়া কুরলান্টজিক বলেছেন, ইউনূস ঢাকার জন্য আরও সাহায্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে শিগগিরই বেইজিং সফর করবেন। কুরলান্টজিক বলেন, ইউনূস নতুন চীনা বিনিয়োগ আনতে আগ্রহী। তিনি চীনের কাছ থেকে ঋণ মাফ এবং বাংলাদেশে নতুন চীনা প্রকল্পে সুদের হার কমানোরও চেষ্টা করছেন। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে কয়েকশ চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সেতু প্রকল্পে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সৈন্যদের সমর্থনে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। বাজপেয়ী বলেন, হাসিনার পতনের পর দিল্লির তোয়াক্কা না করেই ইসলামাবাদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে ঢাকা দ্বিধাবোধ করেনি। তিনি আরও বলেন, ঢাকার সাম্প্রতিক পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসার নিয়ম শিথিল করা এবং নভেম্বরে বাংলাদেশের বন্দরে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের ডকিং এর প্রমাণ।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব হ্রাস দক্ষিণ এশিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। কুরলান্টজিক বলছেন , কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকার হোক বা ইউনূসের সরকার- উভয়ের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেই চীন বাস্তবতা দেখিয়েছে। অন্যদিকে, ভারত এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা এতদিন হাসিনা এবং তার দলকে সমর্থন জুগিয়ে এসেছে। বাজপেয়ী মনে করেন , পাকিস্তানের পাশাপাশি, নয়াদিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের নৈকট্য ভারতের পূর্বমুখী সম্পর্ককে জটিল করে তুলবে। কারণ নয়াদিল্লির ‘অ্যাক্ট ইস্ট’নীতিতে বাংলাদেশ একটি মূল ফ্যাক্টর ।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট






