২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Search
Close this search box.

জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ এ, নাকি আরও পরে

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আহাদ চৌধুরী তুহিন,অমৃতালোক:

আজ রোববার (৮ ডিসেম্ভর) দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর জাতীয় নির্বাচন আগামী বছর, নাকি আরও পরে।প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপিসহ কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রূপরেখা চাইছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের দিন-তারিখ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ আগামী বছর নির্বাচন হতে পারে বলে আভাস দিচ্ছেন।

সর্বশেষ গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) উদ্যোগে আয়োজিত এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের এই সরকার খুবই স্বল্পকালীন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আগামী বছরেই আমরা একটি রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার দেখব। জানি না কী হবে।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের ওপর জোর দেয়। তবে বিএনপি দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। জামায়াতে ইসলামী শুরুতে নির্বাচনের তাগিদ না দিলেও গত কয়েক দিনে দলটির আমির শফিকুর রহমান দুবার দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের কথা বলেছেন।

অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যরা বরাবরই বলে আসছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন হবে। তবে সংস্কার কতটুকু হবে, তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর।

রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র বলছে, নির্বাচন কবে হবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না এলেও বিষয়টি এখন সব মহলে আলোচিত। হয়তো সামনের দিনগুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে একটা সময়সীমা পাওয়া যাবে।

গত ২১ নভেম্বর অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রশ্নে এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে ৩১ অক্টোবর সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির প্রস্তাবিত নাম থেকেই নতুন ইসি গঠন করা হয়।

দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম সুদ পরিশোধ বেড়েছে ৯০ শতাংশ। খবরে বলা হয়, দেশের বৈদেশিক ঋণের খাতে বড় দুঃসংবাদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। নতুন ঋণ ছাড় কমে যাচ্ছে। যেসব নতুন ঋণ ছাড় হচ্ছে, তার বড় অংশই চলে যাচ্ছে আগের মূল ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধে। ফলে নিট ঋণ ছাড় হচ্ছে কম। ঋণের সুদহার বেড়েছে, কমেছে ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড। এতে বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে চাপে পড়বে বাংলাদেশ। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেড়েছে ঋণের স্থিতি।

বৈশ্বিকভাবে ঋণের সুদহার ও দেশের ঋণের স্থিতি বাড়ায় গত বছরে বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে শুধু সুদ পরিশোধ বেড়েছে ৯০ শতাংশ। যা বৈশ্বিকভাবে সর্বোচ্চ। এর আগের বছরে বেড়েছিল ১৫ শতাংশ। বেসরকারি খাতের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ কমলেও বেড়েছে সরকারি খাতের ঋণ পরিশোধের মাত্রা।

শুক্রবার রাতে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদন ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবছর একবার এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক ঋণের সার্বিক তথ্য দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বৈদেশিক ঋণের বিষয়ে কিছু সুসংবাদও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বেড়েছে। বেসরকারি খাতে বেশি সুদের ও স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক ঋণের প্রবাহ কম, কম সুদের ও বেশি মেয়াদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেশি। মোট ঋণের মধ্যে ৫৪ শতাংশই কম সুদের ও দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ। মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিএনআই) বিপরীতে মোট বৈদেশিক ঋণের হার ২২ শতাংশ। এ হার অর্ধেকের বেশি হলে ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। জিএনআইয়ের বিপরীতে ঋণ শোধের হার মাত্র ২ শতাংশ। এসব কারণে বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঝুঁকির মাত্রাও কম।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালের শুরুতে ক্ষমতায় এসে চলতি বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়। ফলে বৈদেশিক ঋণ ওই সরকারের আমলেই সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এসব ঋণ নিয়ে বড় ধরনের লুটপাট করা হয়েছে। ঋণের টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। যা এখন শোধ করতে হচ্ছে এ সরকারকে। পরবর্তী সরকারকে ঋণের দায় নিতে হবে।

দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাই চক্কর আবারও। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসে সপ্তম দফায় যাচাই-বাছাই করে বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিতর্কমুক্ত গ্রহণযোগ্য তালিকা প্রণয়নই এর লক্ষ্য। এ জন্য মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা ও স্বীকৃতি প্রদানের বয়সসীমা পর্যালোচনাসহ সংশ্লিষ্ট আইন এবং নির্দেশিকাও সংশোধন করা হবে। ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার (পিতামহ/পিতা/মাতা ইত্যাদি) গেজেট যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। তৈরি হয়েছে ‘অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ অভিযোগ ফরম’। এতে সারাদেশে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নেওয়ায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির আশঙ্কা করছেন। আবার কেউ কেউ অভিযোগ তুলেছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় বিগত সময়ে তারা গেজেটভুক্ত হতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদানে সিদ্ধান্ত না নিলেও প্রায় দেড় হাজার আবেদন জমা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চাচ্ছেন। আবার মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা সংশোধন নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া অন্যান্য সেক্টরে ভূমিকা রাখায় যারা স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। কারণ নতুন সংজ্ঞায় তাদের সহমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে তাদের মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা অপরিবর্তিত থাকবে।

মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সরকারের আমলে ছয়বার এ তালিকা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালে নতুন করে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। এ জন্য অনলাইনের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রহণ করা হয় প্রায় দেড় লাখ ব্যক্তির আবেদন। ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি উপজেলা পর্যায়ে আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই শুরু হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে আরও যে ৫ দফা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা হয়েছিল, সেই তালিকাও তখন যাচাই করা হয়।

দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে ২০২৩ সালের মার্চে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়। তবে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নতুন করে তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 ‘জেল থেকে পালানো ৭৮ জঙ্গি এখনো অধরা-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, জেল ভেঙে পালানো ৭৮ জন জঙ্গি আসামি এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সারাদেশের ৮ টি কারাগারে কয়েদী ও হাজতীরা বিদ্রোহ করে। এদের মধ্যে ৮৮ জন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিও পালিয়ে যায়। পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৮ জন পুলিশ ও র্যাবের হাতে ধরা পড়ে। বাকি ৮০ জন এখন ফেরারী।

কারাসূত্র জানায়,  জঙ্গি আসামিদের মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে শতাধিক আসামি পালিয়ে যায়। এর মধ্যে এখনও ৭৮ জন আসামি অধরা রয়েছেন। গত ৬ আগষ্ট সকালে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি জেলে কয়েদিদের মধ্যে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। কয়েদিরা কারা অভ্যন্তরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে মোট ১৯৯ জন পালিয়ে যায়। এর মধ্যে ৮৮ জন রয়েছেন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি। নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২০৩ জন আসামি আত্মসমর্পন করেন, তবে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কাশিমপুর কারাগারে দেশের অন্যান্য কারাগার থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের এনে রাখা হয় যাদের সকলেই পালিয়ে যান। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ ও র্যাবের হাতে ৮ জন আসামি গ্রেপ্তার হন।

এ ব্যাপারে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স )  ব্রিগেডিয়ার  জেনারেল সৈয়দ  মোঃ মোতাহের হোসেন  বলেন, কারাগারগুলো থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবন এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার ২ হাজার ২০০ বন্দি পালিয়ে যায়, যার মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনকে  গ্রেপ্তারের পর ফের কারাবন্দি করা হলেও এখনো ৭০০ বন্দি পলাতক রয়েছে। ওই সময়ে আটটি কারাগার থেকে অস্ত্র লুট হয়েছিল ৯৪টি। এর মধ্যে ৬৫টি উদ্ধার করা হয়েছে।  বর্তমানে দেশের ৬৯টি কারাগারের মধ্যে ১৭টি কারাগার অনেক পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ আগস্টের আগে বন্দী ছিল ৫৫ হাজার। যদিও পরবর্তীতে সেই সংখ্যা কমে গিয়েছিল। এখন আবার গ্রেপ্তার চলছে। এখন বন্দী সংখ্যা ৬৫ হাজার।

পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে পলাতক ৭শ বন্দীর তালিকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন শাখায় দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির কাছেও তালিকা দেয়া হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।

দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম অনেক কোম্পানির ব্যালেন্স শিটে টাকা থাকলেও বাস্তবে নেই। প্রতিবেদনে বলা হয়, বেক্সিমকোসহ বড় বড় কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিটে টাকা থাকলেও বাস্তবে তা দেশে নেই। সব টাকা বাইরে চলে গেছে। এই কোম্পানিগুলোর ২০, ৪০, এক লাখ শ্রমিকের বেতন দিতে হবে। কিন্তু তাদের একদিনেই সব বেতন দেয়া সম্ভব নয়।

কথাগুলো বলেছেন, পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি আরো বলেছেন, মানুষের টাকা ব্যাংকে রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকের টাকা বাইরে চলে গেছে। কিন্তু এই টাকা তো মানুষের। এখন ব্যাংকগুলো এবং মানুষের টাকার জন্য আমাদের সম্পদের দরকার। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে আগামী বছর আমরা রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার হয়তো দেখব। তখন দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে।

গতকাল শনিবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) চার দিনব্যাপী বার্ষিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট গাইন্ডারমিট এস গিল ‘দ্য মিডল ইনকাম ট্র্যাপ’ শীর্ষক একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, সম্পদের অভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বেশি বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বৈষম্য কমাতে হলে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ গরিব মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। এই সরকার স্বল্পকালীন সময়ের জন্য এসেছে, তাই সব কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা এখন সম্পদের সঙ্কটে আছি। ফলে বিভিন্ন খাতে কাক্সিক্ষত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে পারছি না।

তার মতে, মার্কেট ইকোনমিকে ইকুয়াল করতে হলে অনেকে এখন বলে, অর্গানাইজেশনাল ডেমোক্র্যাসি লাগবে। প্রান্তিক কৃষক বলি বা শ্রমিকের কথা বলি, তাদের অর্গানাইজেশনাল স্ট্রেন্থ খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চরের জমি দখল হয়ে যায়। হাওর অঞ্চলে অনেক জলাভূমি পড়ে আছে সেগুলোর ব্যবস্থাপনা দরকার। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা এগুলো দখল করে নিয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে এটা যদি শক্তিশালী থাকত অর্গানাইজেশনাল ডেমোক্র্যাসি, গ্রাসরুট ডেমোক্র্যাসি থাকত, তাহলে এখান থেকে অনেক রিসোর্স আসত। এটা যদি গরিবদের কাছে যেত, তাহলে অনেক লাভ হতো।

দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান খবর ‘Clock ticking for 26,000 migrants’ অর্থাৎ ‘২৬ হাজার অভিবাসীর ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়ালালামপুরে হাই কমিশনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনায় মালয়েশিয়ায় ২৬ হাজার বাংলাদেশি তাদের পাসপোর্ট নবায়নে বিলম্বের মুখে পড়েছেন। যা তাদের প্রবাসী জীবনকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। সরকারের মতে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী মালয়েশিয়ায় কাজ করে।

অভিযোগ উঠেছে, অভিবাসী শ্রমিকদের পাসপোর্ট ঘিরে এ পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের একটা অংশের সঙ্গে দালালদের যোগসাজশ।

হাই কমিশন সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যেহেতু ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণে দুর্নীতি ও অনিয়ম করা কঠিন, তাই এই চক্র এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যা কর্তৃপক্ষকে আরও মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ইস্যু করতে বাধ্য করেছে।

 ‘১০০ এজেন্সির পেটে ২৪ হাজার কোটি-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠিয়ে ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির চক্র দেড় বছরেই হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। প্রায় পৌনে ৫ লাখ কর্মীর কাছ থেকে অতিরিক্ত এই অর্থ নিয়ে নিজেদের পকেটে ভরেছে চক্রটি। চাহিদার বেশি কর্মী পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে। এই অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বন্ধ হয়ে যায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শ্রমবাজার।

এই চক্রের সঙ্গে জড়িত হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের চার সংসদ সদস্যের নামও এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে সাবেক চার এমপির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাঁরা হলেন সাবেক মন্ত্রী ও এমপি আ হ ম মুস্তফা কামাল, নিজাম উদ্দিন হাজারী, বেনজীর আহমেদ এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। প্রথম তিনজন আওয়ামী লীগের এবং মাসুদ উদ্দিন জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়ার এই তথ্য এসেছে ‘একটি উন্নয়ন বয়ানের ব্যবচ্ছেদ’ নামের শ্বেতপত্রে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সম্প্রতি দেশের অর্থনীতি নিয়ে যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে, সেখানে এটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

জানতে চাইলে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য (অভিবাসন) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিগত সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের সিন্ডিকেশনের মাধ্যমে ২৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে দেশি-বিদেশিরাও যুক্ত ছিলেন।

রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেট মুভমেন্ট রিসার্চার ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, দেশে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ রিক্রুটিং এজেন্সি থাকলেও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য অনিয়মের মাধ্যমে মাত্র ১০০ এজেন্সিকে অনুমোদন দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। এই এজেন্সিগুলো প্রত্যেক শ্রমিকের

কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে। অনিয়মের কারণে পরে মালয়েশিয়া সরকার জনশক্তি নেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে।

দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘৫ জনের ১০ হাতে প্রশাসন দলীয়। খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান পেশায় ছিলেন অভিনেতা। অধিকাংশ গবেষণায় তিনি ১০ সেরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের একজন। তার সাফল্যের কারণ ছিল একদল চৌকস ও পেশাদার আমলা। যারা সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রেসিডেন্টকে সফল করার জন্য নিবেদিত ছিলেন। রিগ্যানের প্রশাসনবিষয়ক কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।

কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনবিষয়ক বিস্তর অভিজ্ঞতা থাকার পরও তিনি শেষপর্যায়ে এসে বিতর্কিত আমলাদের ওপর নির্ভর করেছিলেন। তারা যতটা না সরকারকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন, তার চেয়ে বেশি নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। স্বার্থের জন্য একচোখা নীতি অনুসরণ করেছেন। কখনো কখনো তারা শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার বলে দাবি করতেন। এ ধরনের আমলাদের কারণে প্রশাসনে বিভক্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল।

এই বিভক্তি প্রশাসনে চাউর ছিল। কিন্তু কারও কিছু করার ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গিয়ে কিছু বলবে, এই সাহস কারও ছিল না। তাদের কারণে রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি হয়েছে। প্রাইম পোস্টে পোস্টিং পেতে দলীয় লোক হওয়া ছিল এক নম্বর শর্ত। আর যত ডাম্পিং পদ আছে, সেগুলো বরাদ্দ ছিল ‘ভিন্নমতাবলম্বী’দের জন্য। এভাবে প্রশাসন ভারসাম্যহীন হয়েছে। অপচয় হয়েছে মেধা ও অর্থের। কিন্তু এর সবকিছুই যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে হয়েছে, বিষয়টি এমন নয়। যদিও দায় তারই কিন্তু অনেক আমলাই শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন। অনেক আমলা শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার সেজেছিলেন। শেখ হাসিনার পতন রাজনীতিবিদদের কারণে যতটা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে দল-দাসত্বকামী আমলাদের জন্য। রাষ্ট্রের প্রতি প্রতিশ্রুতিহীন আমলারাই শেখ হাসিনাকে ভোটারবিহীন ভোটের পথে ঠেলে দিয়েছেন। তারাই ভোটারবিহীন সরকারের স্থপতি।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে শুধু দলদাস খুঁজে খুঁজে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে, চুক্তি দেওয়া হয়েছে।  তারা অনেক অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন। সুবিধা দিয়েছেনও, তবে তা বন্ধুদের, স্বজনদের বা চরম অনুগতদের। সরকার ভেবেছিল তারা সরকারকে টিকিয়ে রাখবেন। কিন্তু তারাই ডুবিয়েছেন।’

 

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর

বিভাগীয় সংবাদ